1. baiozidkhan@gmail.com : admin_bizp :
ঋণসীমা লঙ্ঘন: নির্দিষ্ট গ্রাহকের কাছে জিম্মি রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংক - Business Protidin
শিরোনাম :
প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফের উন্নয়ন সভা অনুষ্ঠিত দেশে সরকারি ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের’ কার্যক্রম শুরু ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ‘ক্ষুদ্র ঋণ ব্যাংক’ গঠনের উদ্যাগ সরকারের পঞ্চমবারের মতো সাউথ এশিয়ান বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন সোনালী লাইফের বেতন কমছে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’ কর্মীদের ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডি হতে লাগবে ২৫ বছরের অভিজ্ঞতা লাভেলো আইসক্রিমের এমডির পরিবারসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠান টিকে থাকা ও সফলতার মৌলিক ভিত্তি: আমির খসরু দারিদ্র্যসীমার নিচে যাওয়ার ঝুঁকিতে দেশের ৬ কোটি ২০ লাখ মানুষ: বিশ্বব্যাংক ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে কঠোর নির্দেশনা জারি

ঋণসীমা লঙ্ঘন: নির্দিষ্ট গ্রাহকের কাছে জিম্মি রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংক

  • সর্বশেষ আপডেট : রবিবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো তাদের বড় গ্রাহকদের কত শতাংশ ঋণ দিতে পারবে, তার সীমা রয়েছে। তবে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালি ব্যাংক বছরের পর বছর সেই সীমা লঙ্ঘন করে বড় গ্রাহকদের অনুকূলে ঋণ বিতরণ করে যাচ্ছে। এতে অল্প কিছু গ্রাহকের কাছে ব্যাংকগুলো জিম্মি হয়ে পড়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংকগুলোর স্বাক্ষরিত ২০২৪ সালের জুনভিত্তিক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) পর্যালোচনা প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক সবচেয়ে বেশি বড় গ্রাহকদের অনুকূলে সীমা লঙ্ঘন করে ঋণ বিতরণ করেছে।

নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকটি পোর্টফোলিওর ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বড় গ্রাহকদের অনুকূলে ঋণ দিতে পারে। যদিও গত বছরের জুন পর্যন্ত জনতা ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের ৭৭ শতাংশই ছিল বড় গ্রাহকদের কাছে। সোনালী ব্যাংক পোর্টফোলিওর ৩৮ শতাংশ ঋণ দেওয়ার কথা। তবে জুন পর্যন্ত ব্যাংকের মোট ঋণের ৪০ শতাংশ ছিল বড় গ্রাহকের কাছে। এছাড়া অগ্রণী ব্যাংকের পোর্টফোলিওর ৩০ শতাংশ নিয়ম থাকলেও ব্যাংকটি মোট বিতরণ করা ঋণের ৩৫ শতাংশই বড় গ্রাকদের দিয়েছে। আর রূপালী ব্যাংকের সীমা ছিল ৩০ শতাংশ। ব্যাংকটি বড় গ্রাহকদের অনুকূলে বিতরণ করেছে ৩১ শতাংশ।

খাত-সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ব্যাংকগুলো সব সময় ছোট ছোট ঋণের পরিবর্তে বড় অঙ্কের ঋণ দিতে বেশি আগ্রহী। এছাড়া বৃহৎ অঙ্কের ঋণে প্রভাবশালীদের চাপ এবং নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনাও বেশি হয়ে থাকে। যার কারণে নির্দিষ্ট খাত ও বড় গ্রুপের কাছে ঋণ কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়ছে। ফলে গুটিকয়েক গ্রাহকের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে ব্যাংকগুলো। বড় গ্রাহক থেকে ঋণ আদায় না হাওয়ার কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণও ঊর্ধ্বমুখী।

গত ৬ জানুযারি ব্যাংকগুলোর সঙ্গে জুনভিত্তিক এমওইউ পর্যালোচনার বৈঠক করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। সেখানে ব্যাংকগুলোর সীমা লঙ্ঘন করে বড় গ্রাহকদের অনুকূলে ঋণ বিতরণ বিষয়ে তুলে ধরা হয়। বৈঠকে বড় গ্রাহকদের অনুকূলে নিয়মের বাইরে দেওয়া ঋণস্থিতি কমিয়ে আনার তাগিদও দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন পর্যন্ত জনতা ব্যাংকের ঋণ বিতরণের স্থিতি ছিল ৯৭ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭৫ হাজার ৬৬৬ কোটিই গেছে ৪৯ গ্রাহকের কাছে। এই ঋণের মধ্যে ফান্ডেড ৬৮ হাজার ৭৫৬ কোটি এবং নন-ফান্ডেড ৬ হাজার ৯১০ কোটি টাকা। জনতা ব্যাংকের মোট ঋণের ৭৭ শতাংশই পাঁচ শাখার মাধ্যমে বিতরণ করা হয়। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, পাঁচ শাখার ঋণ ৩০ শতাংশের নিচে রাখার জন্য।

নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংক তার মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি কাউকে ঋণ দিতে পারে না। জুন পর্যন্ত জনতা ব্যাংক নিয়ম ভেঙে ২২ গ্রাহকের অনুকূলে ২৫ শতাংশের বেশি ঋণ দিয়েছে।

সোনালী ব্যাংকের জুন পর্যন্ত ঋণস্থিতি ছিল ৯৮ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৭ গ্রাহকের কাছেই ৩৯ হাজার ৩৩৬ কোটি টাকার ঋণ। সোনালী ব্যাংকের মোট ঋণের ৩৪ শতাংশ পাঁচ শাখায়। জুন পর্যন্ত সোনালী ব্যাংক নিয়ম ভেঙে ১১ গ্রাহকের অনুকূলে মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি ঋণ দিয়েছে।

সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. শওকত আলী খান বলেন, এখন বড় ঋণ দিচ্ছি না। ছোট ঋণে মনোযোগ দিচ্ছি। বড় গ্রুপগুলোর ঋণ অনিয়মিত হয়ে গেছে। বিশেষ কিছু গ্রুপের ঋণ আদায়ে জোরালো চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপও নেওয়া হচ্ছে।’

এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের জুন পর্যন্ত ঋণস্থিতি ছিল ৭৫ হাজার ৭৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩১ হাজার ৪১৫ কোটি টাকাই ৫৬ গ্রাহকের কাছে। অগ্রণী ব্যাংকের মোট ঋণের ৪২ শতাংশই পাঁচ শাখায়। ব্যাংক নিয়ম ভেঙে ২৫ গ্রাহকের অনুকূলে মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি ঋণ দিয়েছে।

অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘যথাসময়ে ঋণ ফেরত না এলে সুদ বেড়ে যায়। আর সুদ বেড়ে গেলে ঋণস্থিতিও বেড়ে যায়। এর কারণে সীমা লঙ্ঘন হয়েছে।’

প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংকের জুন পর্যন্ত ঋণস্থিতি ছিল ৪৯ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা। মোট ঋণের ১৮ হাজার ২৫৯ কোটি টাকাই ৩৫ গ্রাহকের কাছে। ব্যাংকের মোট ঋণের ৫৬ শতাংশই পাঁচ শাখায় পুঞ্জীভূত। ব্যাংক নিয়ম ভেঙে ১৪ গ্রাহকের অনুকূলে মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি ঋণ দিয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের সোশ্যাল মিডিয়া আইকনে ক্লিক করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2025 Businessprotidin.com
Site Customized By NewsTech.Com