নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ম্যাকসন্স স্পিনিং মিলস কর্তৃপক্ষ কোম্পানিটির উৎপাদন সক্ষমতার অনেকাংশে ব্যবহার করতে পারছে না। যাতে বড় লোকসানের কবলে কোম্পানিটি। এ সমস্যা কাটিয়ে তুলতে উৎপাদন বাড়াতে হবে বলে জানিয়েছে নিরীক্ষক।
ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় এ তথ্য জানিয়েছেন নিরীক্ষক।
নিরীক্ষক জানিয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সক্ষমতার ৭০.৫৭ শতাংশ উৎপাদন করতে পেরেছে ম্যাকসন্স স্পিনিং কর্তৃপক্ষ। যাতে কোম্পানিটির নিট লোকসান হয়েছে ৮৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এ সমস্যা কাটিয়ে আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে কোম্পানিটির উৎপাদন প্রত্যাশিত পর্যায়ে করতে হবে।
এ কোম্পানিটির ২০২৪ সালে ৩০ জুন পূঞ্জীভূত লোকসান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। আর ঋণের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ৬২৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। যা কোম্পানিটির ইক্যুইটি ও দায়ের ৫৬.১৯ শতাংশ।
শেয়ারবাজারের এ কোম্পানিটি মূলত ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে লোকসানে রয়েছে। ওই অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি ৩.৯৩ টাকা করে ৯৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা লোকসান হয়েছিল। যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ৩.৬৯ টাকা করে ৮৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। আর চলতি অর্থবছরের ১ম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০২৪) শেয়ারপ্রতি ১.৭১ টাকা করে ৪০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে।
বিভিন্ন গ্রাহকের কাছে ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের ২১৭ কোটি ৪২ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বলে আর্থিক হিসাবে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এরমধ্যে দীর্ঘদিন ধরে (১ বছরের বেশি সময়) আদায় হচ্ছে না এমন অর্থ রয়েছে। তারপরেও কোম্পানি কর্তৃপক্ষ কোন সঞ্চিতি গঠন করেনি। এর মাধ্যমে লোকসান কম ও সম্পদ বেশি করে দেখানো হয়েছে।
শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা অনুযায়ি ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে অবন্টিত লভ্যাংশ হস্তান্তর করেনি ম্যাকসন্স স্পিনিং। কোম্পানিটিতে ২০১৯-২০ অর্থবছর পর্যন্ত ২ কোটি ২০ লাখ টাকার অবন্টিত লভ্যাংশ রয়েছে।
ম্যাকসন্স স্পিনিং কর্তৃপক্ষ আর্থিক হিসাবে ‘অ্যাডভান্স, ডিপোজিট ও প্রিপেমেন্টস’ হিসেবে ২৯ কোটি ২৫ লাখ টাকার সম্পদ দেখিয়েছে। তবে এ বিষয়ে নিরীক্ষককে প্রমাণাদি দিতে পারেনি। ফলে ওই ২৯ কোটি ২৫ লাখ টাকার সম্পদের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ২৩৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এরমধ্যে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণীর (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদের মালিকানা ৭০ শতাংশ। কোম্পানিটির শনিবার (১৮ জানুয়ারি) শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ৬.৫০ টাকায়।
Leave a Reply