নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি সিকিউরিটিজের বিনিয়োগে সুদের হার ধারাবাহিকভাবে কমে আসছে। সর্বশেষ ৯১ দিনের ট্রেজারি বিলের সুদহার এক সপ্তাহে ১.১৩ শতাংশ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১০.৪৫ শতাংশে। যা গত চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
রোববার (২০ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের আয়োজিত নিলামে তিন মেয়াদের ট্রেজারি বিলেরই সুদহার কমেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় কমেছে স্বল্পমেয়াদি ৯১ দিনের বিলে, যেখানে আগের সপ্তাহে (১৩ জুলাই) সুদহার ছিল ১১.৫৮ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৮২ দিনের ট্রেজারি বিলের সুদহার ৮৫ বেসিস পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১১.৭০ শতাংশে এবং ৩৬৭ দিনের বিলে কমেছে ২৭ বেসিস পয়েন্ট, নতুন হার ১০.৯৮ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাংক খাতে তারল্য বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি সরকারের ঋণগ্রহণ চাহিদা কমে আসাই এই হ্রাসের মূল কারণ।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি প্রচুর পরিমাণে ডলার কিনেছে, যার মাধ্যমে বাজারে বিপুল টাকার সরবরাহ হয়েছে। একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতি কমা ও স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) হারের কাটও সুদ কমার কারণ।
অন্যদিকে, এক শীর্ষ বেসরকারি ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সরকারের নিট ঋণগ্রহণ নেতিবাচক থাকবে। অর্থাৎ নতুন ঋণের চেয়ে পরিশোধ বেশি হচ্ছে। ফলে সরকারি বিল ও বন্ডে চাহিদা বাড়ায় সুদ কমছে।
তিনি আরও জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন জানায় ১৪ দিনের রেপো ও নিশ্চয়তা ভিত্তিক তারল্য সহায়তা (ALS) সেপ্টেম্বর থেকে তুলে নেওয়া হবে, তখন বাজার স্থিতিশীল হয় এবং ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ পরিকল্পনায় স্বস্তি পায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মে মাসে ব্যক্তিখাত ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ৬.৯৫ শতাংশ। যা লক্ষ্যমাত্রা ৯.৮ শতাংশের চেয়ে অনেক কম। বিপরীতে আমানত প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.৭৩ শতাংশ। ফলে ব্যাংকগুলোর হাতে উদ্বৃত্ত অর্থ বেড়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ব্যবসায় বিনিয়োগে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ফলে নতুন পুঁজি ব্যয় ও আমদানি কমছে। একই সঙ্গে রেমিট্যান্স ও রপ্তানিতে স্থিতিশীলতা থাকায় ডলারের সরবরাহ ভালো, যা টাকার তারল্যও বাড়াচ্ছে।
Leave a Reply