নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) প্রস্তাবিত নতুন মার্জিন ঋণ বিধিমালা নিয়ে পুঁজিবাজারে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে।
বাজার সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, প্রস্তাবিত বিধিমালা কার্যকর হলে অধিকাংশ শেয়ার ‘নন-মার্জিন’ হয়ে পড়বে। এতে মার্জিন ঋণ ব্যবসা সংকুচিত হওয়ার পাশাপাশি বাজারে বড় ধরনের মন্দার ঝুঁকি তৈরি হবে।
সংস্কার টাস্কফোর্সের সুপারিশ অনুযায়ী বিদ্যমান মার্জিন ঋণ বিধিমালা বাদ দিয়ে নতুন বিধিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি। গত মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) খসড়াটি জনমত যাচাইয়ের জন্য প্রকাশ করা হয়।
খসড়াটি প্রকাশের পরদিন বুধবার পুঁজিবাজারে দরপতন হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত ৩৬০ কোম্পানির মধ্যে ২০০টির দর কমে যায়, বাড়ে ১১৯টির এবং অপরিবর্তিত থাকে ৩৮টির। দরপতনের ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩১ পয়েন্ট কমে ৫৩৭৯ পয়েন্টে নেমে আসে। একাধিক ব্রোকারেজ হাউসের মতে, নতুন বিধিমালার প্রভাবেই বাজারে এই নেতিবাচক ধারা দেখা দিয়েছে।
প্রথমে প্রস্তাব করা হয়েছিল, ন্যূনতম ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ থাকলেই মার্জিন ঋণ নেওয়া যাবে। তবে বাজারে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার পর সীমাটি কমিয়ে ৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিধিমালায় আরও বলা হয়েছে, কোনো শেয়ার মার্জিনযোগ্য থেকে অযোগ্য হয়ে পড়লে ৫ কর্মদিবসের মধ্যে তা বিক্রি করতে হবে। এতে ‘ফোর্স-সেল’ চাপ তৈরি হয়ে বাজারে কৃত্রিম দরপতন হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, “কোনো শেয়ার অযোগ্য হয়ে গেলে মাত্র ৫ দিনের মধ্যে বিক্রি করে সমন্বয়ের বাধ্যবাধকতা অবাস্তব। এতে ক্রেতাশূন্য বাজার তৈরি হবে, দামও কমবে। বরং গ্রাহক চাইলে ঝুঁকি নিয়ে ওই শেয়ার রাখতে পারে। সমন্বয়ের জন্য ছয় মাস বা এক বছরের সময়সীমা দেওয়া যেতে পারে। এর বাইরে তো ‘ফোর্স-সেল’ ব্যবস্থাও বিদ্যমান।”
সম্ভাব্য প্রভাব—
মার্জিন ঋণের আওতায় শেয়ার কমে আসবে; পুঁজিবাজারে লেনদেন ও তারল্য কমে যাবে; খুচরা বিনিয়োগকারীরা বাড়তি চাপের মুখে পড়বেন; জোরপূর্বক বিক্রি বা ‘ফোর্স-সেল’ বাড়বে, যা বাজারের স্থিতিশীলতা ব্যাহত করবে
অন্যদিকে, নতুন মার্জিন ঋণ বিধিমালা সমর্থকরা বলছেন, এ বিধিমালা কার্যকর হলে ঝুঁকিপূর্ণ লেনদেন কমবে এবং দীর্ঘমেয়াদে বাজারের শৃঙ্খলা ফেরাতে সহায়তা করবে।
Leave a Reply