1. baiozidkhan@gmail.com : admin_bizp :
ইসলামী ব্যাংকের সঞ্চিতি ঘাটতি বেড়ে ৭০ হাজার কোটি টাকা - Business Protidin
শিরোনাম :
প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফের উন্নয়ন সভা অনুষ্ঠিত দেশে সরকারি ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের’ কার্যক্রম শুরু ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ‘ক্ষুদ্র ঋণ ব্যাংক’ গঠনের উদ্যাগ সরকারের পঞ্চমবারের মতো সাউথ এশিয়ান বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন সোনালী লাইফের বেতন কমছে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’ কর্মীদের ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডি হতে লাগবে ২৫ বছরের অভিজ্ঞতা লাভেলো আইসক্রিমের এমডির পরিবারসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠান টিকে থাকা ও সফলতার মৌলিক ভিত্তি: আমির খসরু দারিদ্র্যসীমার নিচে যাওয়ার ঝুঁকিতে দেশের ৬ কোটি ২০ লাখ মানুষ: বিশ্বব্যাংক ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে কঠোর নির্দেশনা জারি

ইসলামী ব্যাংকের সঞ্চিতি ঘাটতি বেড়ে ৭০ হাজার কোটি টাকা

  • সর্বশেষ আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে সবচেয়ে আলোচিত ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি। ব্যাংকটির ঋণের বিপরীতে প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণে বড় অঙ্কের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এই ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬৯ হাজার ৮১৬ কোটি টাকা। প্রভিশন সংরক্ষণের জন্য ব্যাংকটি ২০ বছর সময় চেয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করেছে। অর্থাৎ আগামী ২০ বছরে ধাপে ধাপে তারা ঘাটতি পূরণ করতে চায়।

দেশের ইতিহাসে কোনো ব্যাংক এত বড় অঙ্কের প্রভিশন ঘাটতিতে পড়েনি। ইসলামী ব্যাংক নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২৪ সালের পরিদর্শন প্রতিবেদনে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে গত ডিসেম্বর শেষে দাঁড়িয়েছে ৬৮ হাজার কোটি টাকা, যা তাদের মোট ঋণের ৪২ শতাংশ। পরিদর্শনের আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পাঠানো তথ্যে ইসলামী ব্যাংক খেলাপি ঋণ দেখিয়েছিল এর অর্ধেকেরও কম। খেলাপি ঋণের প্রকৃত অঙ্ক বের হয়ে আসায় নিয়ম অনুযায়ী প্রভিশন সংরক্ষণের অঙ্কও বেড়ে গেছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, ব্যাংকটির শুধু চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ শাখার প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ৯৩৭ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, পরিদর্শনে ইসলামী ব্যাংকের বিগত কয়েক বছরের পুঞ্জীভূত অনিয়মের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এতে ব্যাংকটির বিপুল পরিমাণের খেলাপি ঋণ উদ্ঘাটিত হয়েছে। এসব ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণের জন্য ব্যাংকটি সময় চেয়ে আবেদন করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৬টির মধ্যে ২০টি ব্যাংকই প্রভিশন সংরক্ষণে সময়সহ বিভিন্ন সুবিধা চেয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন করেছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। ইসলামী ব্যাংকসহ এসব ব্যাংকের বিষয়ে একবারে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।

আমানতের সুরক্ষা দিতে সব ঋণের শ্রেণিমান বিবেচনায় ব্যাংকগুলোর মুনাফা থেকে নির্ধারিত হারে নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন রাখতে হয়। বর্তমানে নিয়মিত ঋণের প্রভিশন রাখতে হয় ১ শতাংশ। তিন মাস পর্যন্ত বকেয়া তথা স্পেশাল মেনশন অ্যাকাউন্ট হিসেবে শ্রেণীকৃত ঋণের বিপরীতে ৫ শতাংশ রাখতে হয়। তিন থেকে ছয় মাস পর্যন্ত মেয়াদোত্তীর্ণ বা সাব-স্ট্যান্ডার্ড ঋণে ২০ শতাংশ এবং ৬ থেকে ১২ মাস পর্যন্ত মেয়াদোত্তীর্ণ হলে ডাউটফুল বা সন্দেহজনক মানে শ্রেণীকরণের বিপরীতে ঋণের ৫০ শতাংশ প্রভিশন রাখতে হয়। আর এক বছর বেশি মেয়াদোত্তীর্ণ মন্দ ঋণে প্রভিশন রাখতে হবে শতভাগ। ব্যাংকগুলোর অর্জিত মুনাফা বা উদ্যোক্তাদের জোগান দেওয়া মূলধন থেকে এ প্রভিশন রাখার নিয়ম। প্রভিশন ঘাটতি বেড়ে যাওয়ার মানে আমানতকারীদের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া এবং ব্যাংকের আর্থিক ভিত্তি দুর্বল হওয়া।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ইসলামী ব্যাংক ডিসেম্বরভিত্তিক যে তথ্য জমা দিয়েছিল, সেখানে খেলাপি ঋণ দেখানো হয় ৩২ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা। এটি বিতরণ করা ১ লাখ ৫৫ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা ঋণের ২১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনে নতুন করে আরও ৩২ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ উদ্ঘাটিত হয়। ব্যাংকটির প্রকৃত খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা। এটি মোট ঋণের ৪২ দশমিক ২২ শতাংশ।

খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি দীর্ঘদিনের ‘নন-ফান্ডেড’ দায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনে ‘ফান্ডেড’ করা হয়েছে। যে কারণে এখন সঞ্চিতি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী, ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটিকে ৭৭ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকার প্রভিশন রাখতে হবে। ব্যাংক সংরক্ষণ করেছে মাত্র ৭ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা। এতে ঘাটতি দেখা দিয়েছে ৬৯ হাজার ৮১৬ কোটি টাকা।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকে দেওয়া তথ্যে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রভিশন সংরক্ষণের প্রয়োজনীতা দেখানো হয়েছিল ২০ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। আর সংরক্ষণের পরিমাণ দেখানো হয় ৭ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা। তখন ১৩ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা ঘাটতি দেখানো হয়।

প্রভিশনের আগের হিসাব ধরে ইসলামী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি দেখানো হয় ১২ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। প্রভিশন ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় মূলধন ঘাটতি ৭০ হাজার কোটি টাকায় ঠেকবে। ব্যাংকটির আবেদন অনুযায়ী প্রভিশন সংরক্ষণে ২০ বছর সময় দিলে এখনই আর মূলধন ঘাটতি দেখাতে হবে না। প্রভিশনে ডেফারেল পেলে প্রকৃত অবস্থা যা-ই থাকুক, ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থা তখন কাগজ-কলমে তুলনামূলক ভালো দেখা যাবে।

প্রতিটি ব্যাংকের ডিসেম্বরভিত্তিক বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন পরবর্তী বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে চূড়ান্ত করার আইনি বাধ্যবাধকতা আছে। প্রথমে ব্যাংক প্রতিবেদন তৈরি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে দেয়। এর পর বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন বিভাগ এবং বহির্নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অডিট করা হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনের সময় ব্যাংকের ঋণের গুণগত মান, প্রয়োজনীয় প্রভিশন, মূলধন পর্যাপ্ততা এবং মুনাফা বা লোকসানসহ বিভিন্ন সূচকের সঠিকতা দেখা হয়। ব্যাংকিং পরিভাষায় যা ‘কুইক সামারি’ প্রতিবেদন হিসেবে বিবেচিত।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাতুনগঞ্জ শাখার ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড ঋণের বিপরীতে ৪৩ হাজার ১৭৩ কোটি টাকার প্রভিশন রাখতে হবে। যেখানে সংরক্ষণ করা হয়েছে মাত্র এক হাজার ২৩৬ কোটি টাকা। ঘাটতি হয়েছে ৪১ হাজার ৯৩৭ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ করপোরেট শাখার আমানত রয়েছে মাত্র ৩ হাজার ৯২১ কোটি টাকা। এর বিপরীতে শাখাটির মাধ্যমে দায় সৃষ্টি হয়েছে ৫৩ হাজার ৫০১ কোটি টাকা।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের সোশ্যাল মিডিয়া আইকনে ক্লিক করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2025 Businessprotidin.com
Site Customized By NewsTech.Com