নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে বারবার আলোচনায় আসছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পদত্যাগ করা কমিশনার ড. এ টি এম তারিকুজ্জামানের নাম। অভিজ্ঞতা না থাকায় বিচ্ছিন্ন সিদ্ধান্ত ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে ব্যর্থ বর্তমান কমিশন। পুঁজিবাজারে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। এমন অবস্থায় তারিকুজ্জামানের মতো অভিজ্ঞ কমিশনারকে পুঁজিবাজারের জন্য প্রয়োজন ছিল বলে জানিয়েছেন পুঁজিবাজারের অংশীজনেরা।
একটি মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘বিএসইসিতে যোগ্য চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগ দিতে পারেনি সরকার। এটা আমার একার কথা নয়, বাজারের সব স্টেকহোল্ডারদের কথা। কোথাও এমন কাউকে পাবেন না, যিনি বর্তমান রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনকে যোগ্য বলবে। একজন মেধাবী ও যোগ্য কমিশনার ছিলেন, তাঁকে ষড়যন্ত্র করে তাড়ানো হয়েছে।’
জানা যায়, দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের বিরোধী ছিলেন কমিশনার তারিকুজ্জামান। ৫ আগস্ট ক্ষমতার পালাবদলে বিগত কমিশন বিদায় নিলেও থেকে যান তারিকুজ্জামান। বিষয়টা ভালোভাবে গ্রহণ করেনি শিবলী রুবাইয়াতের তৎকালীন সহযোগিদের একটি চক্র।
তারিকুজ্জামানকে অপসারণের সব ধরনের চক্রান্ত করেছে চক্রটি এবং তাতে সফলও হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের (এফআইডি) থেকে তিন মাসের সময় দিয়ে ১১ সেপ্টেম্বর তারিকুজ্জামানকে অপসারণের আদেশ জারি করাতে সফল হয় চক্রটি। আলোচনা রয়েছে এফআইডির অতিরিক্ত সচিব ও পুঁজিবাজারের প্রধান এবং শিবলীর সরাসরি ছাত্র ড. নাহিদ হোসেন এ কাজে সরাসরি জড়িত ছিলেন।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে এর আগে ড. নাহিদ জানান, এটা তাঁর পর্যায়ের কাজ নয়। কমিশনারদের নিয়োগ ও বাতিল সরকারের হাতে।
আর পরোক্ষভাবে তারিকুজ্জামানকে অপসারণে সহযোগিতা করেছেন বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ১৫ সেপ্টেম্বর তারিকুজ্জামানকে সব দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয় রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন। এরপরই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন তারিকুজ্জামান।
তবে এসব বিষয়ে যৌক্তিক উত্তর দিতে পারেননি বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। রবিবার সাংবাদিক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কমিশনার নিয়োগ আমরা দেই না। এটা আমাদের পর্যায়ে না। এটা সরাসরি সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা হয়েছে।
তাহলে সরকার অব্যাহতি দিয়ে ৩ মাস সময় দেওয়ার পরেও কেনো দপ্তরবিহীন এবং পদত্যাগে বাধ্য করা হলো? এমন প্রশ্নে বিএসইসি চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের উল্টো প্রশ্ন করে বলেন, ‘এটার তো এভাবে উত্তর হয় না। আজকের এই প্রোগ্রামটা কি একজনকে (তারিকুজ্জামান) কেন্দ্র করে?’
বিএসইসি স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, যে জায়গাটায় স্বাধীনভাবে কাজ করা দরকার, সে সব জায়গায় স্বাধীনতা প্রয়োগ করব।
Leave a Reply