1. baiozidkhan@gmail.com : admin_bizp :
একমি পেস্টিসাইডে প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুতে বিনিয়োগকারীদের আপত্তি - Business Protidin
শিরোনাম :
প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফের উন্নয়ন সভা অনুষ্ঠিত দেশে সরকারি ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের’ কার্যক্রম শুরু ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ‘ক্ষুদ্র ঋণ ব্যাংক’ গঠনের উদ্যাগ সরকারের পঞ্চমবারের মতো সাউথ এশিয়ান বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন সোনালী লাইফের বেতন কমছে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’ কর্মীদের ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডি হতে লাগবে ২৫ বছরের অভিজ্ঞতা লাভেলো আইসক্রিমের এমডির পরিবারসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠান টিকে থাকা ও সফলতার মৌলিক ভিত্তি: আমির খসরু দারিদ্র্যসীমার নিচে যাওয়ার ঝুঁকিতে দেশের ৬ কোটি ২০ লাখ মানুষ: বিশ্বব্যাংক ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে কঠোর নির্দেশনা জারি

একমি পেস্টিসাইডে প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুতে বিনিয়োগকারীদের আপত্তি

  • সর্বশেষ আপডেট : শনিবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একমি পেস্টিসাইড লিমিটেডের প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যু সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছেন অভিযুক্ত চার বিনিয়োগকারী।

একইসঙ্গে এ বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে ব্যাখ্যা দিতে আবেদন জানিয়েছেন তারা। এছাড়া, প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যু নিয়ে কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনের কপি চাওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি একমি পেস্টিসাইডের প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুর ক্ষেত্রে অনিয়ম হওয়ার অভিযোগ এনে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের ছয়জনসহ মোট ১৫ ব্যক্তি ও ছয়টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এ সংক্রান্ত অনুসন্ধান প্রতিবেদন দুদকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।

তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কোন প্রকার টাকা জমা না দিয়েই উল্লেখিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নামে প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যু করা হয়েছে। কমিশনের ওই সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়ে বিএসইসির কাছে চিঠি দিয়েছেন অভিযুক্তদের মধ্যে চার বিনিয়োগকারী। এদের মধ্যে তিনজন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং একজন ব্যক্তি বিনিয়োগকারী রয়েছেন।

তাদের দাবি, নির্ধারিত অর্থের চেয়েও বেশি মূল্য দিয়ে তারা কোম্পানির শেয়ার কিনেছেন। এ বিষয়ে তাদের কোন ব্যাখ্যা না নিয়েই বিএসইসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চিঠিতে এ বিষয়ে কমিশনের কাছে তাদের অবস্থানের ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য সুযোগ চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে বিষয়টি দুদুকে পাঠানোর আগে তাদের কাছে একটি কপি দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বরাবর এই সংক্রান্ত একটি চিঠি কমিশনে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে সংস্থার এনফোর্সমেন্ট বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মাহমুদা শিরীনের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। অভিযুক্ত প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বেঙ্গল অ্যাসেট হোল্ডিংস লিমিটেড, চট্টগ্রাম প্লাস্টিক অ্যান্ড ফিসারিজ লিমিটেড, হেরিটেজ ক্যাপিটেল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড এবং ব্যক্তি বিনিয়োগকারী রুহুল আজাদের পক্ষে কমিশনে চিঠিটি পাঠিয়েছেন আফজালুর রহমান।

চিঠিতে বলা হয়, উল্লেখিত চার বিনিয়োগকারী বিএসইসির কাছে অভিযোগের বিষয়ে নিজেদের অবস্থার ব্যাখ্যা দিতে চায়। একতরফাভাবে বিষয়টির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা দেয়ার সুযোগ চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। বিএসইসি বিষয়টি স্পষ্টীকরণের জন্য তাদের কাছে ব্যাখ্যা তলব করতে পারে। একইসঙ্গে বিষয়টি দুদকের কাছে পাঠানোর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ৯৭৩তম কমিশন সভার প্রেস বিজ্ঞপ্তি এবং বিএসইসির তদন্ত প্রতিবেদনের একটি কপি চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, ওই চার বিনিয়োগকারীর মধ্যে তিন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পূর্বে কোম্পানি সংশ্লিষ্টরা শেয়ার ইস্যুর শর্তে ১৪ কোটি টাকা নিয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে একমি পেস্টিসাইডের ব্যাংক হিসাব এবং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রেজা-উর-রহমান সিনহা ও প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) সেলিম রেজাকে সরাসরি এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে চেকে ও নগদে ওই অর্থ দিয়েছেন তিন বিনিয়োগকারী। যার বিপরীতে তাদের নামে ১ কোটি ১৩ লাখ ৯৪ হাজার ৩২৯টি (বোনাস শেয়ারসহ) শেয়ার ইস্যু করা হয়েছে। ওইসময় উল্লেখিত শেয়ারে মূল্য নির্ধারণ করা হয় ১১ কোটি ৩৯ লাখ ৪৩ হাজার ২৯০ টাকা। অর্থাৎ তখন কোম্পানি সংশ্লিষ্টরা তাদের থেকে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা অতিরিক্ত নিয়েছে। আর ব্যক্তি বিনিয়োগকারী রুহুল আজাদ বেঙ্গল অ্যাসেট হোল্ডিংসের থেকে শেয়ার কিনে নিয়েছেন।

এ বিষয়ে ওই তিন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘বেঙ্গল অ্যাসেটস হোল্ডিংসের নামে ১১ লাখ ৩৪ হাজার ১৪০ টি শেয়ার, চিটাগং পেস্টিসাইডস অ্যান্ড ফিসারিজের নামে ৬০ লাখ ৩০ হাজার ৫৮১টি শেয়ার, হেরিটেজ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের নামে ৪১ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৮টি শেয়ার এবং রুহুল আজাদের নামে ৫০ হাজার শেয়ার ইস্যু করেছে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি। এ চার বিনিয়োগকারীর নামে মোট ইস্যু হওয়া শেয়ার সংখ্যা এক কোটি ১৩ লাখ ৯৪ হাজার ৩২৯টি (বোনাস শেয়ারসহ)। এর মধ্যে রুহুল আজাদের শেয়ার বেঙ্গল অ্যাসেট হোল্ডিংস থেকে কেনা হয়েছে। এজন্য তার টাকা সরাসরি কোম্পানি সংশ্লিষ্টরা পাননি। অন্য তিন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর থেকে বিভিন্ন সময়ে নগদ ও ব্যাংক লেনদেনের মাধ্যমে ১৪ কোটি টাকা নিয়েছে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান অর্থ কর্মকর্তা।’

এ বিষয়ে কোম্পানির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন বিষয়ে কমিশন তদন্ত করেছে। আমরা এসব বিষয়ে কমিশনের কাছে ব্যাখ্যা দিয়েছি। তবে টাকা ছাড়া প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুর বিষয়টি ভূলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করছি, বিষয়টি শিগগিরই সামাধান হয়ে যাবে।’

বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের তদন্তকারী টিম একমি পেস্টিসাইডের বেশ কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে টাকা ছাড়া প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুর প্রমাণ পেয়েছে। আবার কেউ কেউ ভুয়া ব্যাংক ডকুমেন্টস দিয়েছে। কেউ কেউ আংশিক টাকা পরিশোধ করছে। আবার কেউ কেউ কোন টাকা না দিয়েই শেয়ার বরাদ্দ নিয়েছেন। এসব বিষয়ে আমরা দুদককে তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলেছি। তবে যারা টাকা পরিশোধ করছে তাদের রিভিউ করার সুযোগ রয়েছে।’

৯৭৩তম কমিশন সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ওই চার বিনিয়োগকারী বাদে কোম্পানি সংশ্লিষ্ট আরো ৬ জন এবং ছাগলকান্ডের মতিউর রহমানসহ ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এই সংক্রান্ত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দুদকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। কোম্পানি সংশ্লিষ্টরা হলেন- চেয়ারম্যান শান্তা সিনহা, এমডি রেজা-উর-রহমান সিনহা, পরিচালক আহসান হাবিব সিনহা ও কে এম হেলুয়ার, কোম্পানি সচিব সবুজ কুমার ঘোষ এবং সিএফও সেলিম রেজা।

বাকি ১১ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮ ব্যক্তি বিনিয়োগকারী হলেন যথাক্রমে- ছাগলকান্ডের মতিউর রহমান, মো. আফজাল হোসাইন, তোফাজ্জাল হোসাইন ফরহাদ, জাবেদ এম মতিন, আঞ্জুমান আরা বেগম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শেখ মোহাম্মদ সরোয়ার, তৌহিদা আক্তার এবং রানা ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দুদকে অভিযোগ পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাকি ৩ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী হলেন- এসকে টিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বিক্রমপুর পটেটো ফ্লেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং এনআরবি ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড।

প্রসঙ্গত, ১৫০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের কোম্পানি একমি পেস্টিসাইডের পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ১৩৫ কোটি টাকা। পুঁজিবাজারে ‘বি’ ক্যাটেগরির এই কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১৩ কোটি ৫০ লাখ। এর মধ্যে ৩ কোটি শেয়ার ইস্যু করে ২০২১ সালে পুঁজিবাজার থেকে ৩০ কোটি টাকা সংগ্রহের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হয় কোম্পানিটি। ওই ৩০ কোটি টাকা ব্যবহারেও কোম্পানিটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের সোশ্যাল মিডিয়া আইকনে ক্লিক করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2025 Businessprotidin.com
Site Customized By NewsTech.Com