নিজস্ব প্রতিবেদক: এনআরবিসি ব্যাংকে ২৩২ কোটি টাকার জালিয়াতির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তা গোপন করে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি নিয়েছেন মো. দেলোয়ার হোসেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক পরিদর্শনে এ তথ্য উন্মোচন হলে তার নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করে বাতিলের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসঙ্গে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক তার বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছে।
মো. দেলোয়ার হোসেন বর্তমানে কমার্স ব্যাংকের প্রধান শাখার ব্যবস্থাপক এবং সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কর্মরত। এর আগে তিনি এনআরবিসি ব্যাংকের উত্তরা শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন। সে সময়েই প্রায় ২৩২ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি ও মানি লন্ডারিংয়ে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
২০২২ সালে এনআরবিসি ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষায় দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে গুরুতর অনিয়মের তথ্য উঠে আসে। সুপারিশ করা হয় বরখাস্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থার। কিন্তু তদন্ত চলাকালেই তিনি পদত্যাগ করেন। যদিও ব্যাংক পরে জানায়, তার পদত্যাগ গ্রহণযোগ্য নয়।
এরপর ২০২৩ সালের মার্চে তিনি কমার্স ব্যাংকে যোগ দেন। যোগদানের সময় স্ট্যাম্পে অঙ্গীকার করে জানান, তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা প্রশাসনিক ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন নেই। বাস্তবে তখনই দুদকের মামলা প্রক্রিয়াধীন ছিল, যা ২০২৩ সালের জুলাইয়ে দেলোয়ারসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়। মামলায় ৭৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও বিদেশে রপ্তানি আয়ের টাকা ফিরিয়ে না আনার অভিযোগ আনা হয়।
পরিদর্শনে আরও দেখা গেছে, দেলোয়ার হোসেনের অনুরোধে কমার্স ব্যাংক ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত প্রায় ১২ কোটি টাকা উত্তোলন করে বিভিন্ন খাতে খরচ দেখায়- যার অনেকটাই সাসপেন্স হিসাব থেকে এবং যথাযথ ভাউচার ছাড়াই। বিশেষভাবে ৭৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার কোনো ব্যয় ভাউচার দেখাতে পারেননি তিনি। এসব লেনদেনকে সন্দেহজনক ও মানি লন্ডারিং হিসেবে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ বিষয়ে দেলোয়ার হোসেন জানান, সব খরচই প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদনে করা হয়েছে। তিনি ব্যক্তিগতভাবে কোনো সুবিধাভোগী নন এবং তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
কমার্স ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, তাকে সম্প্রতি মানবসম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে এবং কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply