বিশেষ প্রতিনিধি: দেশের নন-লাইফ বীমা খাতের ১৭টি কোম্পানিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে নির্ধারণ করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কতৃপক্ষ (আইডিআরএ)। সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বীমা কোম্পানিগুলোর সবকিছু মূল্যায়ন করেই এই ঝুঁকি নিরূপণ করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে অধিকাংশ সর্বশেষ ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে (জানু-মার্চ) বীমা দাবি পরিশোধ করেছে নামমাত্র। সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় ৮টি কোম্পানি বীমাদাবি পরিশোধ করেছে মাত্র ৩৬.০২ শতাংশ। যা গড়ে ৪.৫০ শতাংশ।
উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ ও প্রথম প্রান্তিকে ১০ শতাংশের নিচে দাবি পরিশোধ করা কোম্পানিগুলো হলো- বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ঢাকা ইন্স্যুরেন্স, মার্কেন্টাইল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, সিকদার ইন্স্যুরেন্স এবং স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স।
আইডিআরএ’র তথ্য মতে, আরও ৯টি কোম্পানি উচ্চ-ঝুঁকিতে রয়েছে সেগুলো হলো- ইসলামী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশ, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, তাকাফুল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স এবং নিটল ইন্স্যুরেন্স।
আইডিআরএ সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ ইন্স্যুরেন্স এসময় দাবি পরিশোধ করেছে ৪.০১, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ৩.৪৪ শতাংশ, ঢাকা ইন্স্যুরেন্স ১.৫৯ শতাংশ, মার্কেন্টাইল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স ৯.৮৯ শতাংশ, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স ৮.৪৬ শতাংশ, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ৭.০৭ শতাংশ, সিকদার ইন্স্যুরেন্স ০.১২ শতাংশ এবং স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স ১.৪৪ শতাংশ। যা গড়ে ৪.৫০ শতাংশ। এর মধ্যে একটি কোম্পানির অবস্থার ১ শতাংশের নিচে মাত্র ০.১২ শতাংশ।
এছাড়াও উচ্চ-ঝুঁকিতে থাকা অন্য ৯টি কোম্পানির বীমাদাবি পরিশোধের পরিমাণ- ইসলামী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশ ১১ শতাংশ, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স ৩৩.২১ শতাংশ, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স ১১.৩২ শতাংশ, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স ২৭.৬৩ শতাংশ, তাকাফুল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স ৬১.০৫ শতাংশ, প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স ২৫.৪১ শতাংশ, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স ১২.৬৬ শতাংশ, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স ৪০,০৪ শতাংশ এবং নিটল ইন্স্যুরেন্স ৬০.০৪ শতাংশ।
নন-লাইফ খাতের এই ১৭ কোম্পানির বিষয়ে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান বলেন, দাবি নিষ্পত্তি এবং সম্পদ পর্যালোচনার ক্ষেত্রে আমরা ১৭টি বীমা কোম্পানিকে উচ্চ ঝুঁকিতে পেয়েছি। বীমা কোম্পানিগুলো বীমা আইন ২০১০ মেনে চলছে কিনা তা যাচাই করবেন নিরীক্ষকরা। এছাড়াও ২০২৩ সালের কোম্পানিগুলির আর্থিক বিবরণীও তদন্ত করা হবে। প্রিমিয়াম সংগ্রহ, জমা, ফেরত বা পলিসি বাতিল, পুনঃবীমা, ডাটাবেসের নির্ভুলতা এবং ব্যবস্থাপনা ব্যয় সম্পর্কিত নিয়ন্ত্রক নির্দেশাবলী সঠিকভাবে অনুসরণ করেছে কিনা যাছাই করা হবে।
তিনি বলেন, অব্যবস্থাপনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে এবং নিরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
উচ্চ-ঝুঁকিতে ১৭ কোম্পানির বিষয়ে নন-লাইফ বীমা কোম্পানি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইডিআরএ’র পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে সংস্থাটির পক্ষ থেকে তাদের জানানো হয়েছে- তারা এ ধরণের তথ্য কাউকে দেননি। তবে এই ১৭ কোম্পানির মধ্যে ৬০ শতাংশের বেশি দাবি পরিশোধ করা একটি নন-লাইফ বীমা কোম্পানি কিভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে সেটি আমাদের বোধগম্য নয় বলে জানান এক বীমা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা।
Leave a Reply