বাণিজ্য ডেস্ক: আমেরিকার বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের বেশির ভাগ তৈরি পোশাক। তবে বাজারটিতে অন্যান্য খাতের রপ্তানিও দিন দিন বাড়ছিল। তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো প্লাস্টিক পণ্য। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই বাজারে প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি ৪২ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের কারণে সেই রপ্তানি কমার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীন শীর্ষস্থানীয় প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানিকারক দেশ। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের কারণে চীন থেকে প্লাস্টিক পণ্যের ক্রয়াদেশ অন্যত্র সরছে। তার একটি অংশ বাংলাদেশেও আসছিল।
ফলে এই খাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগও শুরু হয়েছিল। এ জন্য বিদায়ী অর্থবছরে প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানিও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। তবে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত পাল্টা শুল্কহার ৩৫ শতাংশ থেকে কমাতে না পারলে এই সম্ভাবনা ধরে রাখা যাবে না।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী, তিন অর্থবছর ধরে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ও প্রচ্ছন্নভাবে প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি বাড়ছে। যেমন ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২১ কোটি মার্কিন ডলারের প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি হয়েছিল, যা পরের বছরে প্রায় ১৭ শতাংশ বেড়ে ২৪ কোটি ডলারে উন্নীত হয়। আর সর্বশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তা আরও বেড়ে ২৮ কোটি ডলারে ওঠে। এর মধ্যে প্রচ্ছন্ন রপ্তানির পরিমাণ ১৩ কোটি ডলার।
প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় শীর্ষ বাজার, প্রথম হচ্ছে ভারত। ২০২৪–২৫ অর্থবছরে ভারতে ৫ কোটি ৬৭ লাখ ডলারের প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি হয়। আর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি হয়েছে ১ কোটি ৪০ লাখ ডলারের প্লাস্টিক পণ্য, যা এর আগের অর্থবছরের তুলনায় ৪২ শতাংশ বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ৭ হাজার ২৩৪ কোটি ডলারের প্লাস্টিক পণ্য আমদানি করে। তার মধ্যে চীনের ছিল প্রায় ২৭ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে প্লাস্টিক পণ্যের শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক অন্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে কানাডা, মেক্সিকো, কোরিয়া, জার্মানি, ভিয়েতনাম, জাপান, থাইল্যান্ড ও ভারত।
বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির সহসভাপতি মো. এনামুল হক বলেন, ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর চীনের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করেন। তারপর থেকে গৃহস্থালি পণ্য, খেলনা ইত্যাদি পণ্যের রপ্তানি ক্রয়াদেশের ব্যাপারে প্রচুর অনুসন্ধান আসতে থাকে। তার মধ্যে অনেক ক্রয়াদেশ চূড়ান্ত হয়। সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় বড় কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ বাড়াতে থাকে।
Leave a Reply