নিজস্ব প্রতিবেদক: বাজারদর ভেদে তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের সার্কিট ব্রেকার হবে ওপরে ও নিচে সমান, সর্বনিম্ন পৌনে ৪ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ। এ ছাড়া বেক্সিমকো লিমিটেড এবং ইসলামী ব্যাংক ছাড়া বাকি চার শেয়ারের ফ্লোর প্রাইসও প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) থেকে এই দুই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। গতকাল বুধবার বিকেলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গতকাল অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত পলাতক অবস্থায় পদত্যাগের পর খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে চেয়ারম্যান করে নবগঠিত কমিশনের এটি ছিল প্রথম সভা।
আজ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত শেয়ারের সার্কিট ব্রেকার হবে ওপরে ও নিচে সমান ১০ শতাংশ। শেয়ারদর ৫ হাজার টাকার বেশি হলে সে ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকারের হার হবে সর্বনিম্ন পৌনে ৪ শতাংশ। মাঝের শেয়ারদরের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট হার কার্যকর হবে। এ ছাড়া আজ থেকে খুলনা পাওয়ার, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, শাহজীবাজার পাওয়ার এবং বিএসআরএম লিমিটেড ফ্লোর প্রাইসমুক্ত হবে।
এই দুই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রক সংস্থা কর্তৃক চাপিয়ে দেওয়া অযাচিত হস্তক্ষেপ প্রায় মুক্ত হবে শেয়ারবাজার। তবে দুই শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস বহাল রাখার বিষয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, বেক্সিমকো এবং এস আলম নামক ব্যবসায়িক গ্রুপ দুটির কর্ণধার ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্টরা নিজেদের নামে-বেনামে থাকা এ দুই কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে বাজারকে অস্থিতিশীল করতে পারে– এমন গোপন তথ্য থাকার কারণে আরও কিছুদিন এগুলোর ফ্লোর প্রাইস বহাল রাখতে হচ্ছে।
কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান-সংশ্লিষ্টদের টেলিফোন বা মোবাইল ফোনে আড়ি পাতার বিষয়ে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশনস মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সঙ্গে বিএসইসির সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষরের অনুমতি চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল, তা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
অভিযোগ আছে, শেয়ার কারসাজি প্রতিরোধে এমন আড়ি পাতার নাম করে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত তাঁর অপছন্দের ব্যক্তিদের ফোনে আড়ি পাতার জন্য আনুষ্ঠানিক চুক্তি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। যদিও চুক্তির আগেই এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল হাসানের সঙ্গে সখ্যের সূত্রে বেআইনিভাবে বহু জনের ফোনে আড়ি পাতার তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন তিনি।
বিএসইসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে বিশ্বখ্যাত বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। শেয়ার কারসাজিতে তাঁর সম্পৃক্ততা থাকার অভিযোগ ও প্রমাণ থাকাসহ বেশ কিছু বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবগঠিত কমিশন।
এ ছাড়া তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানি বা মিউচুয়াল ফান্ড ঘোষিত লভ্যাংশ এজিএমে পাস হওয়ার পরও বিধি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিতরণে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।
Leave a Reply