1. baiozidkhan@gmail.com : admin_bizp :
মাসরুর রিয়াজের নিয়োগ নিয়ে ‘মুখোমুখি’ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন - Business Protidin
শিরোনাম :
প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফের উন্নয়ন সভা অনুষ্ঠিত দেশে সরকারি ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের’ কার্যক্রম শুরু ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ‘ক্ষুদ্র ঋণ ব্যাংক’ গঠনের উদ্যাগ সরকারের পঞ্চমবারের মতো সাউথ এশিয়ান বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন সোনালী লাইফের বেতন কমছে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’ কর্মীদের ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডি হতে লাগবে ২৫ বছরের অভিজ্ঞতা লাভেলো আইসক্রিমের এমডির পরিবারসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠান টিকে থাকা ও সফলতার মৌলিক ভিত্তি: আমির খসরু দারিদ্র্যসীমার নিচে যাওয়ার ঝুঁকিতে দেশের ৬ কোটি ২০ লাখ মানুষ: বিশ্বব্যাংক ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে কঠোর নির্দেশনা জারি

মাসরুর রিয়াজের নিয়োগ নিয়ে ‘মুখোমুখি’ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন

  • সর্বশেষ আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে ড. এম মাসরুর রিয়াজের নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে বাজার সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বিতর্ক শুরু হয়। শেয়ারবাজারের জন্য তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের ‘সঠিক পছন্দ নয়’ বলে সমালোচনা হয়। এ নিয়ে খোদ বিএসইসির কর্মকর্তাদের মধ্যেই দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। রীতিমতো ‘মুখোমুখি’ অবস্থান নিয়েছেন কর্মকর্তারা।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে মাসরুরের নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি হয়। ওইদিন বিএসইসির অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পূর্ব নির্ধারিত সভায় মাসরুর রিয়াজকে চেয়ারম্যান হিসেবে চান না বলে জানান কর্মকর্তারা।

কারণ হিসেবে কর্মকর্তারা দাবি করেন, সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং সালমান এফ রহমানের সঙ্গে মাসরুর রিয়াজের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। এ নিয়ে কমিশনের নির্বাহী পরিচালক ও অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সাইফুর রহমান লিখিতভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের কাছে চিঠি পাঠান।

তবে মাসরুরের নিয়োগ নিয়ে সাইফুর রহমানের ওই চিঠি নিয়ম বর্হিভূত বলে দাবি করেছেন বিএসইসি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের অন্য একটি পক্ষ। গতকাল বুধবার (১৪ আগস্ট) অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী পরিষদের ৭ সদস্যের ৬ জন পাল্টা এক বিবৃতিতে ওই চিঠির প্রতিবাদ জানায়।

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এর দাপ্তরিক প্যাডে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর একটি পত্র গত ১৩ আগস্ট রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচার হয়,যা দৃষ্টিতে এসেছে।

ওই পত্রে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, সদ্য নিয়োগকৃত বিএসইসির চেয়ারম্যান বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজঅ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সদস্যদের মতবিনিময় সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ড. এন. মাসরুর রিয়াজ- এর মতো বিতর্কিত ব্যক্তির জন্য কমিশনের কর্মপরিবেশ অনুকূলে হবে না, বিধায় ইতোমধ্যে জারিকৃত প্রজ্ঞাপন বাতিল করার দাবি উত্থাপনের সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়।

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, মতবিনিময় সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই। কোনো সিদ্ধান্ত কেবলমাত্র এজিএম/ইজিএম/কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় গৃহীত হওয়া বাঞ্চনীয়। এছাড়া রাষ্ট্রের কোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনো প্রস্তাব কোনো ফোরামে উপস্থাপনের অধিকার অ্যাসোসিয়েশনের নেই।

প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়েছে, মাসরুরকে নিয়ে যে প্রতিবাদ পত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, সেটা একান্তই বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সাইফুর রহমানের নিজের। এর সাথে অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি মো. ফারুক হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান, সহ সাধারণ সম্পাদক মো. সহিদুল ইসলাম, কোষাধক্ষ্য মুহাম্মদ হেমায়েত হোসেন, নির্বাহী সদস্য একেএম ফারুক আলম ও নির্বাহী সদস্য মাহমুদা শিরিনের কোনো সম্পর্ক নেই।

তবে প্রতিবাদ জানানোর একদিন পরই ওই ৬ সদস্য বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) প্রতিবাদলিপি প্রত্যাহার করে একটি বিবৃতি দেয়। সেখানে তারা বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে সাইফুর রহমান যে চিঠি দিয়েছিলেন তাতে আমাদের কোনো দ্বিমত নেই। ধারনাগত ভুলের কারণে আমরা প্রতিবাদলিপি দিয়েছিলাম। ভুল বুঝতে পেরে আমরা তা প্রত্যাহার করছি।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠানো অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সাইফুর রহমানের চিঠিতে বলা হয়েছিলো,
সদ্য বিদায়ী সরকার এবং সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ কোনো বিতর্কিত ব্যক্তিকে চেয়ারম্যান হিসেবে কমিশনে যোগদানকে কমিশনের কর্মচারীগণ স্বাগত জানাবে না। কোনো প্রকার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বা তাদের ছত্রচ্ছায়ায় বা সম্পৃক্ত থাকা কোনো ব্যক্তিকে কমিশনের চেয়ারম্যান বা কমিশনার পদে নিয়োগ প্রদান করে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার সুযোগ না দেওয়া। তাদের কৃতকর্মের দায় কমিশনের কর্মকর্তাগণের ওপর চাপিয়ে কমিশনকে হেয় প্রতিপন্ন করা তথা পুঁজিবাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস থেকে বিরত রাখা।

একই চিঠিতে ড মাসরুরের নিয়োগ বাতিলের দাবি তোলা হয়। এতে বলা হয়, ড. এম. মাসরুর রিয়াজের মতো বিতর্কিত ব্যক্তির জন্য কমিশনের কর্মপরিবেশ অনুকূল হবে না, বিধায় ইতিমধ্যে জারিকৃত প্রজ্ঞাপন বাতিল করার দাবি উত্থাপনের সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়।

সার্বিক বিবেচনায় প্রজ্ঞাপন বাতিলপূর্বক সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে সৎ, যোগ্য, পুঁজিবাজার বিষয়ে অভিজ্ঞ, অরাজনৈতিক ও অবিতর্কিত ব্যক্তিকে নিয়োগ প্রদানের কথাও বলা হয়।

ড. এম. মাসরুর রিয়াজের নিয়োগ ইস্যুতে অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের বিভক্তির কারণ জানতে বাণিজ্য বার্তার পক্ষ থেকে সংগঠনটির সভাপতি মো. সাইফুর রহমান একাধিকবার ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ না করায় কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে ড. এম মাসরুর রিয়াজের নিয়োগ কার্যকর হচ্ছে না বলে ধারনা করছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা। তার বিষয়ে কিছু অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এ কারণে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের নির্দেশে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে মাসরুর রিয়াজকে বিএসইসির চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদও মাসরুর রিয়াজের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে বিএসইসির চেয়ারম্যান নিয়োগ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, তার (মাসরুর রিয়াজ) বিষয়ে কিছু প্রশ্ন আছে। সে বিষয়টি আমি দেখবো। দেখে দু-একদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবো।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, মাসরুর রিয়াজকে মঙ্গলবার বিএসইসির চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তবে বুধবার সচিব মহোদয়ের দপ্তরের নির্দেশে ওয়েবসাইট থেকে সেই প্রজ্ঞাপনটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

মাসরুর রিয়াজকে বিএসইসির চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়ে মঙ্গলবার আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন ১৯৯৩ এর ধারা-৫ ও ৬ এর বিধানাবলী প্রতিপালন করতে, এই আইনের ধারা ৫(২) অনুসারে তাকে নিয়োগের তারিখ থেকে পরবর্তী ৪ বছর মেয়াদের জন্য বিএসইসির চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেওয়া হলো।

জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। সরকারের পতন হলে ১০ আগস্ট বিএসইসির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম পদত্যাগ করার পর গত ১১ আগস্ট মোহাম্মদ মোহসীন চৌধুরীকে নিয়ন্ত্রক সংস্থারটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হয়।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের সোশ্যাল মিডিয়া আইকনে ক্লিক করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2025 Businessprotidin.com
Site Customized By NewsTech.Com