1. baiozidkhan@gmail.com : admin_bizp :
৪৬ নন-লাইফ কোম্পানির দাবি পরিশোধ কেবল ১০.০২ শতাংশ - Business Protidin
শিরোনাম :
প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফের উন্নয়ন সভা অনুষ্ঠিত দেশে সরকারি ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের’ কার্যক্রম শুরু ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ‘ক্ষুদ্র ঋণ ব্যাংক’ গঠনের উদ্যাগ সরকারের পঞ্চমবারের মতো সাউথ এশিয়ান বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন সোনালী লাইফের বেতন কমছে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’ কর্মীদের ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডি হতে লাগবে ২৫ বছরের অভিজ্ঞতা লাভেলো আইসক্রিমের এমডির পরিবারসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠান টিকে থাকা ও সফলতার মৌলিক ভিত্তি: আমির খসরু দারিদ্র্যসীমার নিচে যাওয়ার ঝুঁকিতে দেশের ৬ কোটি ২০ লাখ মানুষ: বিশ্বব্যাংক ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে কঠোর নির্দেশনা জারি

৪৬ নন-লাইফ কোম্পানির দাবি পরিশোধ কেবল ১০.০২ শতাংশ

  • সর্বশেষ আপডেট : সোমবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২৫

বিশেষ প্রতিনিধি: দেশের সম্ভাবনাময় বীমা খাতকে ধ্বংসের পথে নিয়ে গেছে কিছু কোম্পানি। অধিকাংশ মালিকদের হরিলুটের শিকার এই খাতটি। সাধারণ মানুষের কষ্টের জমানো টাকা ফিরত নিতে এসে নানান তালবাহানার সম্মুখীন হচ্ছে গ্রাহকরা। নানান সমস্যায় জর্জরিত নন-লাইফ বীমা খাতে এরিমধ্যে অনিষ্পন্ন দাবির পাহাড় জমেছে। তিন মাসে নামমাত্র ১০.০২ শতাংশ দাবি পরিশোধ হয়েছে আর অনিষ্পন্ন দাবির পরিমাণ ৮৯.০৮ শতাংশ।

দেশের ৪৬টি নন-লাইফ বীমা কোম্পানির জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে অনিষ্পন্ন দাবি দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৮৮৬টি। টাকার পরিমাণে অনিষ্পন্ন রয়েছে ২ হাজার ৮২৫ কোটি ৮৪ লাখ ৮৪ হাজার ৮৮৬ টাকা। এসময়ে কোম্পানিগুলোর দাবি উত্থাপন করা হয় ৩ হাজার ১৪০ কোটি ৪২ লাখ ৯৮ হাজার ৪৬৩ টাকা। দাবি পরিশোধ করা হয় ৩১৪ কোটি ৫৮ লাখ ১৩ হাজার ৫৭৭ টাকা। অর্থাৎ দাবি পরিশোধের পরিমাণ মাত্র ১০ দশমিক ০২ শতাংশ।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) প্রকাশিত তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) অনিরীক্ষিত দাবি সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

আইডিআরএর প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে শুধু সাধারণ বীমা করপোরেশনের অনিষ্পন্ন দাবি জমেছে এক হাজার ৪৮৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫৭ হাজার ৮৭৮ টাকা। সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটিতে বীমা দাবি উত্থাপন হয় এক হাজার ৫৫৮ কোটি ৩৪ লাখ এক হাজার ৪৮৬ টাকা। পরিশোধ করেছে মাত্র ৭৪ কোটি ৩৮ লাখ ৪৩ হাজার ৬০৮ টাকা। দাবি পরিশোধের হার মাত্র ৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

দেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত নন-লাইফ ও পুনঃবীমা প্রতিষ্ঠান হলো সাধারণ বীমা করপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটি সরাসরি যেমন বীমা করে তেমনি পুনঃবীমাও করে। পুনঃবীমা হলো একটি বীমা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অন্য একটি বীমা প্রতিষ্ঠানের আংশিক বা পূর্ণ বীমাদাবির দায়সহ বীমা কিনে নেওয়া।

বীমা আইন ২০১০ অনুযায়ী, গ্রাহক কোম্পানিতে বীমা দাবির আবেদন করার ৯০ দিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করতে হয়। কিন্তু মাসের পর মাস, বছরের পর বছর পার হলেও কোম্পানিগুলো দাবি পরিশোধ করছে না।

অনিষ্পন্ন বীমা দাবিতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স। এই কোম্পানির অনিষ্পন্ন দাবি জমেছে ২৯৪ কোটি ৫৩ লাখ ৮০ হাজার ৯৮৯ টাকা। কোম্পানিটির দাবি উত্থাপিত হয়েছিলো ৩০৪ কোটি ৫১ লাখ ৭২ হাজার ৯২৯ টাকা। পরিশোধ করেছে ৯৯৭ লাখ ৯১ হাজার ৯৪০ টাকা। অর্থাৎ দাবি পরিশোধ হয়েছে মাত্র ৩ দশমিক ২৮ শতাংশ।

দাবি পরিশোধের দিক দিয়ে এরপরেই পিছিয়ে রয়েছে প্রগতি ইন্স্যুরেন্স। এই কোম্পানিটির অনিষ্পন্ন দাবি রয়েছে ১৭৫ কোটি ১৫ লাখ ১০ হাজার ৪২২ টাকা। জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে দাবি উত্থাপন হয়েছিলো ১৮০ কোটি ৯৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ টাকা। পরিশোধ করেছে ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৩০ হাজার ১৮৩ টাকা। অর্থাৎ দাবি পরিশোধ করেছে মাত্র ৩ দশমিক ২০ শতাংশ।

১৪৭ কোটি ৫৯ লাখ ৮০ হাজার ২১৬ টাকার অনিষ্পন্ন দাবি নিয়ে এরপরেই রয়েছে রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স। জুলাই-সেপ্টেম্বরে এই কোম্পানিতে মোট ১৮৪ কোটি ৯৩ লাখ ৩১ হাজার ২৪৬ টাকা। পরিশোধ করেছে মাত্র ৩৭ কোটি ৩৩ লাখ ৫১ হাজার ৩০ টাকা। দাবি পরিশোধ করেছে মাত্র ২০ দশমিক ১৯ শতাংশ।

এছাড়াও বীমা দাবি পরিশোধে পিছিয়ে রয়েছে ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, পিপলস ইন্স্যুরেন্স, নর্দার্ন ইসলামী ইন্স্যুরেন্স ও ঢাকা ইন্স্যুরেন্স।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বীমা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বিজনেস প্রতিদিনকে জানান, আইডিআরএ প্রতি বছর নতুন পরিকল্পনা নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করে। যার অধিকাংশই এই খাতের উপকারে আসে না। কিন্তু মূল জায়গায় তারা কি পদক্ষেপ নিতে পেরেছে? বিশেষ করে বীমা দাবি পরিশোধে তাদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। অথচ বীমা দাবি পরিশোধে তাদের কঠোর হওয়ার কথা।

তারা বলেন, কিছু কিছু কোম্পানি বীমা দাবি পরিশোধ না করায় পুরো খাতের উপর প্রভাব পড়েছে। এই খাতের সমস্যা নিরসনে সরকার ব্যাংকে যেমন নতুন টাকা ছাপিয়ে নগদ তারল্য সহায়তা দিয়েছে; তেমনি বীমা খাতকে সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য এমন পদক্ষেপ খুবই প্রয়োজন। আইডিআরএ’র এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া খুবই জরুরি।

সাধারণ বীমা করপোরেশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, সাধারণ বীমা করপোরেশনের কাছে যে অমীমাংসিত দাবি জমেছে তার বেশিরভাগই পুনঃবীমা দাবি। গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমরা যে দাবি পেয়েছি তার মাত্র পাঁচ শতাংশ নিষ্পত্তি হয়েছে। অনেক গ্রাহক প্রয়োজনীয় নথি দিতে পারেননি। এই কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো দাবি পরিশোধ করতে পারছে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাসিনা শেখ বলেন, এমনিতেই আমাদের দেশে বীমা নিয়ে নেতিবাচক আলোচনা রয়েছে। এখন দাবি পরিশোধে কোম্পানির ধীরগতি আরও নেতিবাচক আলোচনার জন্ম দিচ্ছে। এতে সামগ্রিকভাবে নতুন গ্রাহকে তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করছে।

বীমা দাবি নিষ্পত্তির বিষয়টি নিয়ে আইডিআরএ’র পরিচালক ও মুখপাত্র জাহাঙ্গীর আলম বিজনেস প্রতিদিনকে বলেন, বীমা দাবি পরিশোধের জন্য কোম্পানিগুলোকে নিয়মিত আইডিআরএ তাগিদ দিচ্ছে। তার অংশ হিসেবে গত ২৩ ডিসেম্বর বীমা মালিকদের সংগঠনের সঙ্গে আইডিআরএ’র বৈঠক হয়েছে। সেখানে দাবি পরিশোধের জন্য বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের সোশ্যাল মিডিয়া আইকনে ক্লিক করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2025 Businessprotidin.com
Site Customized By NewsTech.Com