নিজস্ব প্রতিবেদক: সর্বজনীন পেনশন স্কিমে ইসলামিক ভার্সন না থাকায় নাগরিকদের একটা বড় অংশ এতে অন্তর্ভুক্ত হতে অনীহা প্রকাশ করছে। একই কারণে দেশের লাখ লাখ মসজিদের ইমামদের প্রচার কাজে লাগানো যাচ্ছে না। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি স্কিমের ইসলামিক ভার্সন চালুর উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে চালু থাকা প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা এবং সমতা এই চার স্কিমেরই ইসলামিক সংস্করণ চালু করা হবে। এ লক্ষ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ইতোমধ্যে একটি আন্তর্জাতিক পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ইসলামিক ভার্সন চালুর পাশাপাশি স্কিমগুলোতে বিমা সুবিধা সংযোজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের পেনশন স্কিমের আওতাভুক্ত করারও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
জানা যায়, ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ জানানো হয়েছে। প্রয়োজনে আমরা গভর্নরকে আবার অনুরোধ জানাবো বলে জানান সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য গোলাম মোস্তফা।
জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, বাংলাদেশ একটি মুসলিম প্রধান দেশ এবং এখানে অধিকাংশ মানুষ ধর্মভীরু। যেহেতু সর্বজনীন পেনশন স্কিমগুলোর ইসলামিক ভার্সন নেই, তাই ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এখানে আসছেন না। ফলে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধনের গতিও বাড়ছে না। সবদিক বিবেচনা করেই বর্তমানে চালু থাকা চারটি স্কিমের ইসলামিক ভার্সন চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চারটি স্কিমের ইসলামিক ভার্সন চালুর বিষয়টি বিস্তারিতভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পেনশন পরিচালনা পর্ষদের পরবর্তী সভায় উপস্থাপনের জন্য বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, কীভাবে চারটি স্কিমে ইসলামিক ভার্সন চালু করা যায়, তার পরিকল্পনা ঠিক করতে এডিবির অর্থায়নে একটি আন্তর্জাতিক পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া স্কিমগুলোতে বিমা সুবিধা সংযোজন করা, ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের পেনশন স্কিমের আওতাভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ইন্টারন্যাশনাল সোশ্যাল সিকিউরিটি অ্যাসোসিয়েশনের (আইএসএসএ) সদস্যপদ গ্রহণের চেষ্টা চলছে।
জানা যায়, নিবন্ধনসহ সর্বজনীন পেনশন স্কিমের যাবতীয় কার্যক্রম বর্তমানে একটি ডিজিটাল ওয়েব প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ও জনগণের মোবাইলনির্ভর দৈনন্দিন জীবনযাত্রার বাস্তবতা বিবেচনায় জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপ করেছে, যা বর্তমানে সাবস্ক্রাইবারদের ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত। মোবাইল অ্যাপটি দ্রুত উন্মুক্ত করা হতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রায় ছয় লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতাভুক্ত করার লক্ষ্যে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিয়েছে। এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে গত ১৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সভায় একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতাভুক্ত করার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব প্রণয়ন করে প্রতিবেদন পেশ করবে।
Leave a Reply