নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যাংকের মতো দুর্বল বীমা কোম্পানিরও সাময়িক মালিকানা নিতে পারবে সরকার। সরকার ও আইডিআরএ বীমা কোম্পানি অবসায়ন, একীভূতকরণ বা তৃতীয় পক্ষের কাছে সম্পূর্ণ বা আংশিক শেয়ার বিক্রি করতে পারবে। বিদ্যমান বীমা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী বা অন্য কর্মীদের অপসারণ করতে পারবে।
এ লক্ষ্যে ‘বীমাকারীর রেজল্যুশন অধ্যাদেশ-২০২৫’-এর একটা খসড়া প্রস্তুত করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
জারি হতে যাওয়া অধ্যাদেশের আলোকে রেজল্যুশন বা নিষ্পত্তির জন্য এরই মধ্যে সমস্যাগ্রস্ত ১৫টি বীমা কোম্পানিতে বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগ দিয়েছে আইডিআরএ। প্রাথমিকভাবে সরকার এসব প্রতিষ্ঠানের সাময়িক মালিকানা নিতে পারে বলে জানা গেছে।
প্রতিষ্ঠানের অবস্থার উন্নতির জন্য আইডিআরএ প্রশাসক নিয়োগ বা অন্য যে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে। তবে বীমা কোম্পানির মালিকানা তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রির আগে এক বা একাধিক ব্রিজ বীমাকারী প্রতিষ্ঠান গঠন করতে হবে। সাধারণভাবে যার মেয়াদ হবে দুই বছর। তবে মেয়াদ বাড়িয়ে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর করা যাবে। প্রতিটি ব্রিজ বীমাকারী প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য একটি পর্ষদ, প্রধান নির্বাহী নিয়োগ করা হবে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ নিয়ে তহবিল গঠন করা হবে।
আইডিআরএ অধ্যাদেশের খসড়ার ওপর বিভিন্ন পক্ষের মতামতের জন্য আগামী সপ্তাহে সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে। এরপর দ্রুততম সময়ে অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হবে। বীমার খসড়া করা হয়েছে ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশের আলোকে।
তবে ব্যাংকের ক্ষেত্রে শুধু আমানতকারীর ক্ষতিপূরণের কথা বলা হয়েছে। আর এখানে শেয়ারধারক ও পাওনারদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, আর্থিক খাতে আস্থা ফেরানো এ অধ্যাদেশের অন্যতম লক্ষ্য। আর কোন বীমা কোম্পানি নিষ্পত্তি করা হবে, তা নির্ধারণ করা হবে সম্পদের গুণগত মান যাচাইয়ের মাধ্যমে প্রকৃত অবস্থা উদ্ঘাটনের মাধ্যমে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, এ অধ্যাদেশের বিধান অনুযায়ী সরকার এবং কর্তৃপক্ষ রেজল্যুশনের অধীন কোনো বীমাকারীকে সাময়িকভাবে সরকারি মালিকানায় আনার সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। কর্তৃপক্ষ এক বা একাধিক শেয়ার হস্তান্তরের আদেশ দিতে পারবে। যেখানে হস্তান্তরগ্রহীতা সরকারি মালিকানাধীন কোনো কোম্পানি হবে। আবার গ্রাহক সুরক্ষায় একটি তহবিল হবে। বীমা প্রতিষ্ঠান নিষ্পত্তিতে এ তহবিল ব্যবহার করা যাবে।
এ ছাড়া বীমা খাতের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় একটি কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। কাউন্সিলের উদ্দেশ্য হবে আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বীমা খাতের পদ্ধতিগত সংকট চিহ্নিত করে তা সমাধান করা।
আইডিআরএর একজন কর্মকর্তা বলেন, বীমা রেজল্যুশন অধ্যাদেশের খসড়ার প্রাথমিক উদ্দেশ্য পলিসিধারীর স্বার্থ রক্ষা করা। সময়মতো দাবি নিষ্পত্তি নিশ্চিত করা এর অন্যতম লক্ষ্য। আইডিআরএ সম্প্রতি দুর্বল রেটিং পাওয়া বীমা কোম্পানিগুলোর বিশেষ নিরীক্ষা পরিচালনা করেছে। অডিটের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা হবে।
Leave a Reply