1. baiozidkhan@gmail.com : admin_bizp :
৩২ বীমা কোম্পানির অনিষ্পন্ন দাবি ৩ হাজার ৩৯০ টি - Business Protidin
শিরোনাম :
প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফের উন্নয়ন সভা অনুষ্ঠিত দেশে সরকারি ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের’ কার্যক্রম শুরু ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ‘ক্ষুদ্র ঋণ ব্যাংক’ গঠনের উদ্যাগ সরকারের পঞ্চমবারের মতো সাউথ এশিয়ান বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন সোনালী লাইফের বেতন কমছে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’ কর্মীদের ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডি হতে লাগবে ২৫ বছরের অভিজ্ঞতা লাভেলো আইসক্রিমের এমডির পরিবারসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠান টিকে থাকা ও সফলতার মৌলিক ভিত্তি: আমির খসরু দারিদ্র্যসীমার নিচে যাওয়ার ঝুঁকিতে দেশের ৬ কোটি ২০ লাখ মানুষ: বিশ্বব্যাংক ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে কঠোর নির্দেশনা জারি

৩২ বীমা কোম্পানির অনিষ্পন্ন দাবি ৩ হাজার ৩৯০ টি

  • সর্বশেষ আপডেট : সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে ব্যবসা পরিচালনা করা ৩৬টি জীবন বীমা কোম্পানির মধ্যে ৩২টির কাছে প্রায় ১১ লাখ গ্রাহকের অনিষ্পন্ন বীমা দাবি জমেছে ৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা। এরমধ্যে একটি কোম্পানির অনিষ্পন্ন দাবির পরিমাণই দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩১০ কোটি টাকা।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অনিষ্পন্ন বীমা দাবি রয়েছে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।

বীমা কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) প্রকাশিত তৃতীয় প্রান্তিকের (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) অনিরীক্ষিত দাবি সংক্রান্ত প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, তৃতীয় প্রান্তিক শেষে ৩২টি জীবন বীমা কোম্পানির মোট অনিষ্পন্ন বীমা দাবির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩৯০ কোটি ৩২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৮২ টাকা। আলোচ্য সময়ে মোট দাবি উত্থাপন করা হয় ৫ হাজার ৪৪৮ কোটি ৮১ লাখ ২৪ হাজার ৬০৮ টাকা। এরমধ্যে কোম্পানিগুলো পরিশোধ করেছে ২ হাজার ৫৮ কোটি ৪৮ লাখ ৭৮ হাজার ৯২৬ টাকা।

বীমা আইন ২০১০ অনুযায়ী, গ্রাহক কোম্পানিতে বীমা দাবির আবেদন করার ৯০ দিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করতে হয়। কিন্তু মাসের পর মাস, বছরের পর বছর পার হলেও কিছু কোম্পানি দাবি পরিশোধ করছে না।

বিশাল পরিমাণের বীমা দাবি অনিষ্পন্ন থাকার বিষয়ে খাত সংশ্লিষ্টরা অপরিকল্পিত ও মন্দ বিনিয়োগকে দায়ী করছেন। তাছাড়া এজেন্টদের উচ্চহারের কমিশন দেওয়া ও অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়ও দায়ী বলে মনে করেন তারা। তারা বলেন, সময় মতো বীমা দাবি পরিশোধ না হওয়াতে সামগ্রিকভাবে বীমা খাতের প্রতি মানুষের আস্থাহীনতা তৈরি হচ্ছে। এ কারণে দেশে জীবনবীমা গ্রাহণের হার বাড়ার বদলে কমছে।

আইডিআরএ’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি অনিষ্পন্ন বীমা দাবি রয়েছে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের। এককভাবে এই কোম্পানির বীমা দাবি জমেছে ২ হাজার ৩১০ কোটি ৯১ লাখ ৫৮ হাজার ৪০৩ টাকা। জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই কোম্পানির বীমা দাবি উত্থাপন করা হয়েছিল ২ হাজার ৩৪৫ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। পরিশোধ করেছে ৩৪ কোটি ৯৪ লাখ ৩২ হাজার ৫৩৭ টাকা। অর্থাৎ পরিশোধ করা হয়েছে মোট দাবির মাত্র ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

অনিষ্পন্ন বীমা দাবিতে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। ৯ মাসে এই কোম্পানির ২৩১ কোটি ৮ লাখ ৯ হাজার ১৭৩ টাকা দাবি উত্থাপন করা হয়। নিষ্পত্তি হয় এক কোটি ৮৭ লাখ ৩৯ হাজার ২৭৬ টাকা বা মাত্র ০.৮১ শতাংশ। অনিষ্পন্ন দাবি জমেছে ২২৯ কোটি ২০ লাখ ৬৯ হাজার ৮৯৭ টাকা।

দাবি পরিশোধে এরপরই পিছিয়ে আছে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স। তিন প্রান্তিক মিলে এই কোম্পানির বীমা দাবি উত্থাপন হয় ১৭৬ কোটি ৬০ লাখ ৬৪৭ টাকা। পরিশোধ করা হয় মাত্র ৮ কোটি ৩০ লাখ ৮৬ হাজার ১৯৫ টাকা বা ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। অনিষ্পন্ন দাবি রয়েছে ১৬৮ কোটি ২০ লাখ ১৪ হাজার ৪৫২ টাকা।

অনিষ্পন্ন বীমা দাবিতে এরপরেই রয়েছে সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স। এই কোম্পানিতে বীমা দাবি উত্থাপন করা হয়েছিলো ১৪৫ কোটি ৮৫ লাখ ৬৭ হাজার ৭৮৫ টাকা। পরিশোধ করেছে মাত্র এক কোটি ৭৩ লাখ ৭৯ হাজার ৬৭১ টাকা বা ১ দশমিক ১৯ শতাংশ। অনিষ্পন্ন দাবি রয়েছে ১৪৪ কোটি ১১ লাখ ৮৮ হাজার ১১৪ টাকা।

দাবি পরিশোধের বিষয়ে সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও রিসিভ করেননি।

এসব কোম্পানি ছাড়াও দাবি নিষ্পত্তিতে পিছয়ে আছে বায়রা লাইফ, গোল্ডেন লাইফ, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স ও হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।

আইডিআরএ’র একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ব্যাপক আর্থিক অনিয়মের কারণেই মূলত কোম্পানিগুলো ঠিকমতো বীমা দাবি পরিশোধ করতে পারছে না। যে কোম্পানিগুলোর বেশি দাবি অনিষ্পন্ন রয়েছে তাদের প্রচুর টাকা লুটপাট হয়েছে।

তিনি বলেন,অপরিকল্পিত বিনিয়োগ, এজেন্টদের নিয়মের বাইরে গিয়ে উচ্চহারে কমিশন দেওয়া ও অফিস ব্যবস্থাপনায় বেশি খরচ বীমা তহবিল কমানোর পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজের ক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে। রাজনৈতিক ও আইনি সীমাবদ্ধতার কারণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বড় ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারেনি। প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের পাশাপাশি এই খাতের ক্ষতি করছে।

আইডিআরএ’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, তৃতীয় প্রান্তিকে ৩টি কোম্পানি শতভাগ বীমা দাবি নিষ্পত্তি করেছে। কোম্পানিগুলো হলো- আলফা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, লাইফ ইন্স্যুরেন্স কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ বা এলআইসি বাংলাদেশ ও মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। আর শান্তা লাইফ নতুন কোম্পানি হওয়ায় কোনো বীমা দাবি উত্থাপন হয়নি।

অপরিশোধিত বীমা দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে ফারইস্ট ইসলামী লাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। এখনো উন্নয়ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসা হয়নি। তবে অনিষ্পন্ন বীমা দাবি নিষ্পত্তি করতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।

প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সাইদুল আমিন বলেন, আমরা দাবি পরিশোধে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৩৮ কোটি টাকার দাবি পরিশোধ করা হয়েছে। বছর শেষ হওয়ার আগে আরও অন্তত ২ কোটি টাকা পরিশোধের পরিকল্পনা রয়েছে।

বীমা দাবি নিষ্পত্তির বিষয়টি নিয়ে আইডিআরএ’র মুখপাত্র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বীমা দাবি পরিশোধের জন্য কোম্পানিগুলোকে নিয়মিত আইডিআরএ তাগিদ দিচ্ছে। এরপরও যদি কোম্পানিগুলো দাবি পরিশোধে অগ্রণী না হয় তাহলে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে দুটি বড় বিকল্প আছে। হয় প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া নয়তো কোম্পানির নিবন্ধন বাতিল করা। কিন্তু দ্বিতীয়টি বিভিন্ন কারণেই করা কঠিন।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমরা কোম্পানিগুলোর আর্থিক অনিয়মে জড়িত পরিচালকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়ে টাকা উদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছি। দাবি নিষ্পত্তির জন্য এর আগে স্থায়ী সম্পদ বিক্রির নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের সোশ্যাল মিডিয়া আইকনে ক্লিক করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2025 Businessprotidin.com
Site Customized By NewsTech.Com