নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন পিএলসির শেয়ারদর মাত্র ১২ কার্যদিবসে দ্বিগুণের কাছাকাছি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময় শেয়ারের দৈনিক লেনদেন বেড়েছে ২০ গুণের বেশি।
এই দর বৃদ্ধিকে বাজার সংশ্লিষ্টরা অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন। তাদের দাবি, কোনো মৌলিক কারণে এই দৃর দৃদ্ধি হয়নি। বাজারে গুঞ্জন রয়েছে, একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়িয়ে মুনাফা তুলে নিয়েছে।
কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন নিয়ে ডিএসই কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত পরিচালনা করে। তবে সেই তদন্ত প্রতিবেদনে একাধিক অসংগতি ধরা পড়ে, বিশেষ করে তিনটি সন্দেহজনক বিও হিসাবের ভূমিকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সম্পন্ন হওয়া লেনদেনের তথ্য সেখানে অনুপস্থিত ছিল। ফলে সেই প্রতিবেদনকে অসম্পূর্ণ ও দুর্বল হিসেবে বিবেচনা করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নতুন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
ডিএসইর দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন ঘাটতিপূর্ণ বলে মনে করছে বিএসইসি। সম্প্রতি ডিএসইর সিআরওকে পাঠানো চিঠিতে কমিশন জানায়, প্রতিবেদনটি গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ের পরিষ্কার ব্যাখ্যা দেয়নি, বিশেষ করে সন্দেহজনকভাবে সক্রিয় বিও হিসাবগুলোর ভূমিকা অনুপস্থিত। তাই ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যাসহ নতুন প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বিএসইসির গত ১৭ ফেব্রুয়ারির চিঠির ভিত্তিতে ডিএসই ২৫ মার্চ যে প্রতিবেদন দেয়, তাতেও তিনটি সক্রিয় বিও আইডি এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের একটি লেনদেনের বিবরণ ছিল না।
লেনদেন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৯ জানুয়ারি এনার্জিপ্যাক পাওয়ারের শেয়ারের দাম ছিল ১২ টাকা ৫০ পয়সা। মাত্র ১২ দিনে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৪ টাকা, প্রায় ৯২ শতাংশ বৃদ্ধি। এ সময় শেয়ার লেনদেনও অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়; ২৮ জানুয়ারির ৮৪ হাজার ৭৩৬টি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারিতে তা হয় ২৭ লাখ ১৪ হাজার ৯৭০টি, যা ২১ গুণের বেশি।
এই উল্লম্ফনের পেছনে তিনটি বিও হিসাবের সক্রিয় ভূমিকা থাকলেও সেগুলোর কার্যকলাপ বিস্তারিতভাবে উল্লেখ না করে ডিএসই চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। অনেক বিনিয়োগকারী মনে করছেন, ওই হিসাবগুলোর মাধ্যমে দাম নিয়ন্ত্রণ ও মনোপলি তৈরি করে বাজারে বিভ্রান্তিকর সংকেত ছড়ানো হয়েছে, যা বাজার স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।
Leave a Reply